Monday, June 8, 2015

 




বহুমূত্র রোগ
দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ডায়াবেটিস বা বহুমুত্র রোগ। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতিই হলো এ রোগের মূল কথা। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন ইনসুলিন, যার সহায়তায় দেহের কোষগুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজকে নিতে সমর্থ হয় এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে। ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কাজ করার ক্ষমতা-এর যেকোনো একটি বা দুটোই যদি না হয়, তাহলে রক্তে বাড়তে থাকে গ্লুকোজ। আর একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঘটে নানা রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে থাকে।
 
রোগ নির্ণয়
মানুষের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ সাধারণত ৩.৩ থেকে ৬.৯ মিলি.মোল/লি আর খাবার পর <৭.৮ মিলি.মোল/লি।কিন্তু যদি গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৭ মিলি.মোল/লি আর খাবার পর >১১ মিলি.মোল/লি পাওয়া যায়,তবে তার ডায়াবেটিস আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
 
ধরন
বহুমূত্র রোগ বা ডায়াবেটিস বললে সাধারাণতঃ ডায়াবেটিস মেলাইটাস বোঝায়। তবে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস নামে আরেকটি রোগ আছে যাতে মূত্র উৎপাদন বেশী হয় কিন্তু তা ADH নামে অন্য একটি হর্মোনের উৎপাদনের অভাব বা ক্রিয়ার অভাবে হয়ে থাকে এবং মূত্রাধিক্য এবং তার জন্য অতিতৃষ্ণা এই দুটি উপসর্গের মিল ছাড়া এই রোগটির সঙ্গে "ডায়াবেটিস মেলাইটাস"-এর কোন সম্পর্ক নেই। এ দুটির মধ্যে ডায়াবেটিস মেলাইটাসের প্রকোপ অনেক বেশী। ডায়াবেটিস মেলাইটাস আবার দু'রকম হতে পারে।
যথাঃ টাইপ-১ বা ইনস্যুলিন নির্ভরশীল এবং টাইপ-২ বা ইনস্যুলিন নিরপেক্ষ ডায়াবেটিস।
টাইপ-২
টাইপ-২ বহুমুত্র রোগের পেছনে থাকেsfsdf মূলত ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’।
টাইপ-১ বহুমুত্র হলো অটোইম্যুন রোগ। এ রোগে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। তাই যাদের টাইপ-১ হয়, এদের দেহে ইনসুলিন উৎপাদিত হয় খুবই কম। এ জন্য রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্প নিতে হয়। শিশু ও তরুণদের মধ্যে এ ধরনের বহুমুত্র হয় বেশি। ১০-৩০ বছরের মধ্যে দেখা দেয়।ইহা মূলত জেনেটিক কারনে হয়ে থাকে।এর জন্য দ্বায়ী হল HLADR 3 এবং HLADR 4 ।
টাইপ-১ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়
• টাইপ-১-এ অটোইমিউনিটির জন্য বিটা কোষের ধংসের কারনে এই টাইপ-১-এ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে ।
• টাইপ-১-বি ইহা ও বিটা কোষের ধংসের করনে হয়ে থাকে, কিন্তু এর সঠিক কারন জানা যায়নি ।
টাইপ-২ রোগীরা শরীরে যে ইনসুলিন উৎপন্ন হয়, একে ব্যবহার করতে পারে না। ব্যায়াম ও খাদ্যবিধির সাহায্যে একে প্রথমে মোকাবিলা করা হয়। তবে অনেক সময় প্রয়োজন হয় মুখে খাওয়ার ঔষুধ, এমনকি ইনসুলিন ইনজেকশন। ৪০ বছর বা তারপরে এ ধরনের বহুমুত্র রোগ দেখা দেয়।
বিশ্বজুড়ে ২৪৬ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগীর ৯০ শতাংশের বেশি হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। দুই ধরনের ডায়াবেটিসই গুরুতর এবং হতে পারে শিশু ও তরুণদেরও। এ জন্য ডায়াবেটিসের বিপদ-চিহ্নগুলো জানা খুবই প্রয়োজন। ‘মৃদু ডায়াবেটিস’ বলে কিন্তু কিছু নেই।
 
অন্যান্য ধরণ
নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় তৃতীয় এক প্রকার ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। ইহা জ্যেষ্টেশানেল ডায়াবেটিস নামেও পরিচিত।
 
সাধারণ লক্ষণাদি
• ঘন ঘন প্রস্রাব। এ কারণে এ রোগটির নাম বহুমূত্র রোগ ;
• অধিক তৃষ্ণা এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া ;
• অতিশয় দুর্বলতা ;
• সার্বক্ষণিক ক্ষুধা ;
• স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস ;
• চোখে ঝাপসা দেখা।ৱ ;
• ঘন ঘন সংক্রমণ।
 
বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন জটিলতা
• অতিরিক্ত মেদ এ রোগের অনত্যম কারণ ;
• উপসর্গহীনতা বা অসচেতনতার কারণে চিকিৎসার অভাব ;
• কিডনি বা বৃক্কের অক্ষমতার অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস ;
• অন্ধত্ব বা দৃষ্টিবিচ্যূতির অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস ;
• বিনা দুর্ঘটনায় অঙ্গেচ্ছেদের অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস।
আমাদের হোমিওপ্যাথিতে অনেক ঔষধ আছে যা এই রোগ নিরাময় করতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

No comments:

Post a Comment

ক্যালসিয়াম (Calcium) সমাচার!!

ক্যালসিয়াম সমাচার!! অনেক মানুষ মুড়ির মত যে ওষুধগুলো খায়, তার মধ্যে ক্যালসিয়াম (Calcium) ট্যাবলেট একটি। শরীরে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা সুবিস্তৃত। ...