Thursday, March 21, 2019

কিডনি পাথর (Kidney Stone)

কিডনি পাথর হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে এবং এটা মূত্রনালীর যে কোন অংশকে প্রভাবিত করতে পারে - কিডনি থেকে মূত্রাশয় পর্যন্ত।
• স্বল্পমুত্র
• শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি।
• প্রস্রাবে বিভিন্ন মাত্রায় লবণের আধিক্য।
• গরম আবহাওয়া।
• হরমোনের অসমতার কারণে প্রস্রাবে সাইট্রেটের পরিমাণ কমে যাওয়া।
• মূত্রথলিতে দীর্ঘ সময় প্রস্রাব জমে থাকা এবং পর্যাপ্ত প্রস্রাব না হওয়া।
• প্রস্রাবের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা বা প্রস্রাবের বেগ না থাকা • প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা।
• কিডনিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ও সংক্রমণ।
• কিছু ঔষধ বা অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম এর জন্য।

পাথর গঠনকারী উপাদানের ওপর নির্ভর করে কিডনি পাথর বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
• ক্যালসিয়াম অক্সালেট (Calcium Oxalate Stone)
• ক্যালসিয়াম ফসফেট (Calcium Phosphate Stone)
• ইউরিক এসিড (Uric Acid)
• সিস্টিন (Cystine)

প্রস্রাবে দ্রবীভূত ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ফসফেট, ট্রিপল-ফসফেট, ইউরিক এসিড, সিস্টিন, সালফার প্রভৃতি পদার্থ প্রস্রাবের সঙ্গে কিডনিতে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে। এভাবে দীর্ঘ সময় অবস্থানের পর পাথরের আকার ধারণ করে এবং দিন দিন বড় হতে থাকে।
নারীদের চেয়ে পুরুষদের পাথর হওয়ার ঘটনা কিছুটা বেশি। সব পাথর উপসর্গ তৈরি করে না। ফসফেট পাথর সাধারণত নীরব থাকে। এ পাথর আকারে খুব বড় হলে কিডনির টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কেবল তখনই উপসর্গ দেখা দেয়। কিডনিতে পাথর হলে শতকরা ৭৫ ভাগ ক্ষেত্রে রোগী ব্যথা এবং প্রস্রাবে রক্ত যাওয়ার কথা বলেন। সংক্রমণ থাকলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
কিডনি পাথরের ব্যথা নির্ভর করে পাথরের অবস্থানের ওপর। পাথর যদি কিডনিতে থাকে তা হলে ব্যথা অনুভূত হয় পিঠে, পাঁজরের ঠিক নিচে। এ ব্যথা পেছন থেকে সামনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাঁটাচলায় ব্যথা বেড়ে যায়। বিশেষ করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় ব্যথা তীব্র হয়।
পাথর বৃক্কনালিতে থাকলে কোমরের পশ্চাৎভাগে ব্যথা হয় এবং এ ব্যথা সেখান থেকে কুঁচকিতে ছড়ায়। বৃক্কনালিতে পাথর নিচের দিকে নেমে যাওয়ার সময় নালিতে সংকোচন হয় ও ব্যথা করে। হাঁটু গেড়ে বসলে ব্যথা বেড়ে যায়।
ব্যথার সময় রোগীর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে এবং প্রস্রাব ধোঁয়াটে হতে পারে। পাথর বৃক্কনালিতে আটকে যেতে পারে, তখন নারীদের যৌনাঙ্গে ও পুরুষদের লিঙ্গ মুণ্ডে অথবা অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা করে। রোগীর প্রস্রাব করতে অসুবিধা হতে পারে, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা সামান্য পরিমাণ বা ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব হতে পারে। প্রস্রাব খুব যন্ত্রণাদায়ক হয়।
রোগ নির্ণয় করতে
• প্রস্রাব পরীক্ষা
• এক্স-রে KUB
• আলট্রাসনোগ্রাম করা হয় ।
চিকিৎসা
হোমিওপ্যাথিতে এর ভাল চিকিৎসা আছে ।
কি খাবেন আর কি খাবেন না:-
• প্রচুর পরিমাণে তরল খেতে হবে।
• যেসব অসুখে কিডনিতে পাথর হতে পারে তার চিকিৎসা করতে হবে, যেমন : হাইপার প্যারাথাইরয় ডিজম, গাউট, হাইপার ক্যালসেমিয়া সংক্রমণ, সারকয়ডোসিস, অ্যাড্রেনাল ডিসঅর্ডার ইত্যাদি।
• দুধ, পনির ও উচ্চ ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার পরিহার করতে হবে।
• রেডমিট, মাছ প্রভৃতি উচ্চ পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার পরিহার করতে হবে।
• সোডিয়াম বাই কার্বোনেট অথবা সাইট্রেট গ্রহণ করতে হবে।
• সালফারসমৃদ্ধ খাবার, যেমন—ডিম, গোশত বা মাছ সীমিত করতে হবে।
• কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি সীমিত করার প্রয়োজন নেই। কারণ এগুলো পাথর তৈরি করে না।
প্রচুর পানি পান করতে হবে। কিডনি পাথরের ঝুঁকি কমাতে অন্তত ২.৫ - ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। সিস্টাইন পাথরের জন্য ৪ লিটার পানি পান করতে হবে।
চিনিযুক্ত খাবার, ফলের জুস, কফি এবং চা কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মাংস, মাছ, সীফুড, হাঁস এবং ডিম সহ পশু প্রোটিন সীমাবদ্ধ করতে হবে।
প্রতি দিন অ্যানিম্যাল প্রোটিন ২ থেকে ৩ সারভিং এর বেশি গ্রহণ করা যাবে না।
উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন যেমন শুকনো মরিচ, মটরশুটি গ্রহণ করতে হবে।
আপনি খাওয়া লবণ (সোডিয়াম)বন্ধ বা এর পরিমাণ সীমাবদ্ধ করুণ।
প্রসেসিং খাদ্য বা প্যাকেটজাত খাদ্য পরিহার করুণ।
ক্যালসিয়ামের পরিপূরক গ্রহণের পরিবর্তে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান। দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য, কাঁটা সহ ছোট মাছ খেতে পারেন।
আপনি যদি ভিটামিন সি গ্রহণ করতে চান তবে নিশ্চিত করুন যে আপনি প্রতিদিন 1000 মিলিগ্রাম কম গ্রহণ করছেন। উচ্চ পরিমাণের ভিটামিন সি পাথরের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন । 
Dr. Faridul Islam Shohag 
D.H.M.S (BHB-Dhaka)
P.D.T (Homeopathic Medicine)
M.P.H (Nutrition). 
Consultant, Homeopathic Medicine & Nutrition.

No comments:

Post a Comment

ক্যালসিয়াম (Calcium) সমাচার!!

ক্যালসিয়াম সমাচার!! অনেক মানুষ মুড়ির মত যে ওষুধগুলো খায়, তার মধ্যে ক্যালসিয়াম (Calcium) ট্যাবলেট একটি। শরীরে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা সুবিস্তৃত। ...